হারিয়ে গেছে এই নাম গুলো। এক কালের দিকপাল ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন এই হারিয়ে যাওয়া নাম গুলো। এই লেখা টা সেই হারিয়ে যাওয়া নাম নিয়ে। উদেশ্য একটাই, নিজে নাম গুলো জানা আর অন্যদের জানানো। নাম গুলো সবই নিয়েছি হারিয়ে গেছে এমন একটা বই থেকে নেওয়া। এই বই টার নাম হলো কলকাতার ফুটবল। লেখক 'আরবি', মনে তো হোয় এটা ছদ্দনামে লেখা।বই টার ফরওয়ার্ডিং নোট আবার লেখা গোষ্ঠ পাল এর। পাবলিশ করেছিলেন ইস্ট লাইট পাবলিশিং হাউস। ১৯৫৫ সাল।
কলকাতার ফুটবল এর উপরে আরো বেশ কিছু বই আছে - ইংলিশ, বাংলা দুটো ভাষা তেই। কিন্তু আমার মনে হয় "কলকাতার ফুটবল" ই প্রথম বাংলা বই বাংলার ফুটবল এর ইতিহাস এর উপরে। এর পরে আরো বই ছাপানো হয়েছে - রূপক সাহার বই গুলো প্রতি টাই বেশ ভালো লেখা - সব থেকে বড় অনেক খেটে লেখা। তবে "কলকাতার ফুটবল" সমকালীন ফুটবল এবং ফুটবল এর চরিত্র যে ভাবে তুলে ধরেছে তা দুর্লভ।
আরবি এর বইটার গুরুত্ব অনেক জায়গা তেই। অনেক জায়গা তেই লেখক নিয়ে এসেছেন প্লেয়ার দের জানার সুবিধা। নিয়ে এসেছেন এমন সোর্স , যা বোধ হই আজকে হারিয়ে গেছে। এই বইটাও তো হারিয়েই গেছে। আগরতলা লাইব্রেরি থেকে হারিয়ে গেলে হয়ত কপি ও থাকবে না।
ফুটবল এর আগে অল্প কিছু কথা বলা দরকার বইটার লেখা সম্পর্কে। ভারত তখন সবে স্বাধীন হয়েছে। বই টির মধ্যে নতুন কিশোর দেশ এর প্রাণ রয়েছে। ভাষার মধ্যে রয়েছে একটা চন মনে ভাব। এটা ফুটবল খেলা। ফুটবল এর ভিতরে আনন্দ, প্রাণ এর যোগ বই এর ভাষা তে। বই সেই প্রাণ ধরে রেখেছে। গোষ্ঠ পাল একটা ছোট্ট ভূমিকা লিখেছিলেন। সেটা বইটার গুরুত্ব খুব সহজে অল্প কথাতে তুলে ধরেছে।
মোহন বাগান এর প্রথম নাম ছিল মোহনবাগান স্পোর্টস ক্লাব। সাহেব পন্ডিত এর কাছে মতামত চাইতে গেলেন কর্তারা। সাহেব জানতে চাইলেন ক্লাব এর কি মাছ ধরা, শিকার করা এই সব কিছু এর পরিকল্পনা আছে ? নেই শুনে মত দিলেন নাম পাল্টে হওয়া উচিত এথলেটিক ক্লাব। সেই থেকে মোহনবাগান এর নাম পাল্টে গেল।
কলকাতার ফুটবল এর উপরে আরো বেশ কিছু বই আছে - ইংলিশ, বাংলা দুটো ভাষা তেই। কিন্তু আমার মনে হয় "কলকাতার ফুটবল" ই প্রথম বাংলা বই বাংলার ফুটবল এর ইতিহাস এর উপরে। এর পরে আরো বই ছাপানো হয়েছে - রূপক সাহার বই গুলো প্রতি টাই বেশ ভালো লেখা - সব থেকে বড় অনেক খেটে লেখা। তবে "কলকাতার ফুটবল" সমকালীন ফুটবল এবং ফুটবল এর চরিত্র যে ভাবে তুলে ধরেছে তা দুর্লভ।
আরবি এর বইটার গুরুত্ব অনেক জায়গা তেই। অনেক জায়গা তেই লেখক নিয়ে এসেছেন প্লেয়ার দের জানার সুবিধা। নিয়ে এসেছেন এমন সোর্স , যা বোধ হই আজকে হারিয়ে গেছে। এই বইটাও তো হারিয়েই গেছে। আগরতলা লাইব্রেরি থেকে হারিয়ে গেলে হয়ত কপি ও থাকবে না।
ফুটবল এর আগে অল্প কিছু কথা বলা দরকার বইটার লেখা সম্পর্কে। ভারত তখন সবে স্বাধীন হয়েছে। বই টির মধ্যে নতুন কিশোর দেশ এর প্রাণ রয়েছে। ভাষার মধ্যে রয়েছে একটা চন মনে ভাব। এটা ফুটবল খেলা। ফুটবল এর ভিতরে আনন্দ, প্রাণ এর যোগ বই এর ভাষা তে। বই সেই প্রাণ ধরে রেখেছে। গোষ্ঠ পাল একটা ছোট্ট ভূমিকা লিখেছিলেন। সেটা বইটার গুরুত্ব খুব সহজে অল্প কথাতে তুলে ধরেছে।
প্রায় ২০০ পাতার বই। পুরো বই তুলে ধরার দরকার নেই। বইটার শুরু টা বড় ভালো। না দিলেই নয়।
ইংরেজ ঘর থেকে বাইরে আসতে জুতো মোজা নেকটাই না বেধে বার হতে পারে না, বলে লাঠি মারার সময় তাদের কে পায়ে জুতো থাকবে তাই নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। এদিকে বাঙালী ছেলেদের জন্ম কাটে শুধু
পায়ে, খুব জোর খোরম কি চটি দিয়ে পায়ের তলার মাটির সাথে প্রতক্ষ্য স্পর্শ্য এড়িয়ে চলে। আধুনিক জীবনের দাবিতে বাড়ির বাইরে যাবার সময় যদি বা জুতো পরতে হয়, বাড়িতে ঢুকেই সঙ্গে সঙ্গেই টান মেরে খুলে ফেলে সেই জুতো , আলগা পায়ে হওয়া লাগিয়ে স্বস্তির হাফ ফেলে। তাই ফুটবল খেলতে গিয়ে তাদের বুটের কথা মনে উদয় হয় নি। শুধু পায়ে বল নিয়ে শুট করার, পায়ের আঙ্গুল দিয়ে কৌশলে বল টেনে নেওয়া এবং আলগা পায়ে তর তর করে দৌড়ানোর মধ্যে দিয়ে বাঙালী ইংরেজ এর ফুটবল কে প্রকৃত ফুটবল রূপে দিল নতুন প্রতিষ্ঠা।
প্রথম যুগে দলে দলে বাঙালী ছেলেরা খেলতে আসতো নর্থ কলকাতার রাজবাড়িতে। নিজেদের মধ্যে দোল ভাগ করে খেলে। তোর জোরের ব্যাপার নেই, গায়ে গেঞ্জি, পরনে হাফ প্যান্ট বা হাটু তুলে ধুতি এটে মাঠে নেমে গেলেই হতো। খেলার পরে একটু খাওয়া দাওয়া ? সেই যুগে রাজবাড়িতে এমনিতেই তার ব্যবস্থা থাকতো।
পপ্রথম নেটিভ ক্লাব ছিল শোভাবাজার। সেটা ছিল উত্তরের ক্লাব। উল্টো দিকের প্রথম নেটিভ ক্লাব ১৮৮৫ সালের ন্যাশনাল এসোসিয়েশন। আজকের রামকৃষ্ণ মিসন শিশু মঙ্গল হসপিটাল এর জায়গাতে ন্যাশনাল এর প্রথম মাঠ। সাহেব দের সাথে জেতার প্রথম রেকর্ড কিন্তু ন্যাশনাল এর। ১৯০০ সালে ট্রেডস কাপ জিতলো ন্যাশনাল।
ইস্ট বেঙ্গল এর প্রথম ডিভিশন এ ওঠা ১৯২৪ সালে। সেই প্রথম বছরের ইস্ট বেঙ্গল এর ষ্টার প্লেয়ার ছিলেন মোনা দত্ত। মোনা আজকের প্রফেশনাল প্লেয়ার দের মতই দল বদল এ ওস্তাদ। উয়াড়ি তে গোলকীপার ছিলেন। ইস্ট বেঙ্গল এ হলেন সেন্টার ফরওয়ার্ড। বা পায়ের শট, দুরন্ত হেড , সুযোগ সন্ধানী মুভমেন্ট, সব মিলিয়ে মোনা দত্ত ছিলেন আজকের ভাষা তে যাকে বলে কমপ্লিট ফরওয়ার্ড।
ময়দানে বুট পরে প্রথম খেলতেন সুধীর চ্যাটজী'। তার পরে হামিদ। মুসলিম হলেও হামিদ খেলতেন মোহনবাগান এ।
আর তখনকার একমাত্র দাড়িওলা প্লেয়ার।
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি
১৮৭২ ক্যালকাটা ফুটবল ক্লাব , এরা কিন্তু প্রথমে রাগবি খেলত। পরবর্তী কালের ক্যালকাটা এর সাফল্যের কাহিনীর তুলনা নেই। লীগ, শিল্ড মিলিয়ে ক্যালকাটা এর সাফল্য ১৯৩০ এর দশক পর্যন্ত আর কোনো ক্লাব এর ছিল না।
১৮৭৮ ট্রেডস ক্লাব, পরে নাম পাল্টে হলো ডালহৌসি এথলেটিক ক্লাব, আজও এর টিমটিমে অস্তিত্ব আছে
১৮৭৯ শোভাবাজার, জমিদার দের ক্লাব, নেটিভ দের প্রথম ক্লাব, রাজ বাড়ির জিতেন্দ্রকৃষ্ণ দেব ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা
১৮৮৪ কুমারটুলি ক্লাব
১৮৮৫ ন্যাশনাল - প্রথম ট্রেডস কাপ জেতা সেই ১৯৯০ এ, প্রাথমিক উদেশ্য ছিল শরীর গঠন
১৮৮৯ মোহনবাগান, এরিনেস ও বোধ হয় ওই বছরেই শুরু হয়
১৮৮৯ ট্রেডস কাপ এ নর্মান প্রিচাড এর প্রথম হ্যাট্রিক , এই নর্মান প্রিচাড ই পরে ভারত থেকে অলিম্পিক এ প্রথম মেডেল পেয়েছিলেন।
পূবালী ঝড়
এমন শিরোনাম পাল্টানোর দরকার কি। "পূবালী ঝড়" চ্যাপ্টার এ লেখক বলছেন কি করে পূর্ব বাংলাতে ফুটবল এর ঝড় উঠলো। যখন কলকাতাতে ফুটবল এর শুরু , তার কাছাকাছি সময় এ শুরু পূর্ব বাংলাতেও। ঢাকা তে ইংরাজ
পল্টন দল নিজেদের মধ্যে নিয়মিত খেলত। আস্তে আস্তে ফুটবল ঢাকার সাধারণ মানুষ এর খেলা হয়ে যায়। পূর্ব বাংলার অন্য প্রান্তের থেকে ঢাকা তে খেলতে আসতে থাকলো উদীয়মান প্রতিভা। ঢাকার তখন ২ প্রধান ক্লাব। উয়ারী আর ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং। উয়াড়ি আবার ইংল্যান্ড এর আর্সেনাল কে নকল করে লাল সাদা জার্সী পরে খেলত। তবে ঢাকার ক্লাব এর বরাবরই ইচ্ছা ছিল কলকাতা তে এসে করে দেখানো। উয়াড়ি খেলা শুরু করলো কলকাতার
আই. ফ. এ শীল্ড এ। ১৯১৮ সালে উয়াড়ি মোহন বাগান কে ১-০ তে হারিয়ে দিল। কানু রয় গোষ্ঠ পাল কে কাটিয়ে সেই দিনের খেলার এক মাত্র গোল দিলেন। উয়াড়ি কলকাতা তে খেলতে না এলে হয়তো ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব এর প্রতিষ্ঠাই হত না। ইস্ট বেঙ্গল এর প্রথম অধিনায়ক, যিনি আবার ইস্ট বেঙ্গল এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা খেলতেন উয়াড়ি এর রাইট আউট এ। পাখি সেন, হিরেন সেন, মোনা দত্ত, ভানু দত্ত, জ্ঞানা পোদ্দার এরা সবাই ইস্ট বেঙ্গল এর প্রথম দিকের প্লেয়ার। সবাই এসেছিলেন উয়াড়ি থেকে।
মনে রাখতে হবে প্রথম যুগে একটার নিয়ম এর কথা। এক জন কে সারা বছর একই ক্লাব এ খেলতে হবে এমন কোনো নিয়ম সেই যুগে ছিল না। কোনো এক প্রতিযোগিতায় এক দলের হয়ে খেলে অন্য দলের হয়ে আর এক প্রতিযোগিতা যে কেউ খেলতে পারত।
ইস্ট বেঙ্গল
বই এর শেষ চ্যাপ্টার ইস্ট বেঙ্গল এর ওপর। ১৯৪০ এর শেষ থেকে ১৯৫০ মাঝ পর্যন্ত হলো ইস্ট বেঙ্গল এর ইতিহাস। ১৯৫৫ তে লেখা এই বই। ১৯৫৬ তে মোহন বাগান আবার জিতবে লীগ। তার পর থেকে মোহন বাগান এর রাজোত্ত চলবে প্রায় ১৯৬৫পর্যন্ত। মাঝে একবার যদিও ইস্ট বেঙ্গল জিতেছিল ১৯৬১ তে। তবুও ৬০ এর দশক মোহন দশক। বইটা তার আগে লেখা বলে ইস্ট বেঙ্গল এর কথায় শেষ হচ্ছে। দেখা যাক ইস্ট বেঙ্গল এর কি কি নামের কথা রয়েছে।
আপ্পা রাও বোধহই ভুলে যাওআ নাম না। কিন্তু নীহার মিত্র, অমিতাভ মুখার্জী কে কি লোকে মনে রেখেছে। সুনীল ঘোষ ছিলেন নামকরা ফরওয়ার্ড। মোনা মল্লিক উইং এর প্লেয়ার ছিলেন। ভারতীয় জাতীয় দলের নিয়মিত প্লেয়ার। বেশি কথা তে কাজ কি - সোজা বইয়ের ভাষা তুলে ধরা যাক।
পাখি সেন এর নাম আজকেও শোনা যায়। ভেঙ্কটেশ, সালে, আপ্পা রাও - ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব টেন্ট এ গেলে দেখা পাবো। ইস্ট বেঙ্গল ভোলেনি।
বই টা আর খুব কম লোকই পড়বেন, তাই শেষ করার আগে শেষ পাতা টা এখানে দিয়ে যাই। বই শেষ হচ্ছে উজ্জ্বল এক সম্ভবানার মধ্যে।
No comments:
Post a Comment