এটা হলো নাটোর এর ইতিহাস, যার সাথে যুক্ত হয়ে আছে মৈত্রদের নাম। আমি ইন্টারনেট থেকে একটা পুরোনো বই পেলাম, যেটা আদতে নাটোরের ইতিহাস। বইটা তে নাটোরের মৈত্র দের ইতিহাস নিয়েও অনেক কথা রয়েছে। সেই ইংরেজি বইটার গুগল স্ক্যান করে, তার পরে গুগল ট্রান্সলেশন এ ফেলে এই ইতিহাসের গল্প।
ফ্যামিলি হিস্ট্রি লেখার ইচ্ছা থাকলেও সেই রকম রসদ নেই হাতে। তাই আর যাই হোক না কেন, এটা পারিবারিক ইতিহাস নয়। আমার সাথে এই লেখার ঠিক দুটো যোগ রয়েছে:
১. আমাদের পদবি মৈত্র আর এই ইতিহাস এর শুরু টাও কামদেব মৈত্র কে নিয়ে;
২. পরের যোগাযোগ টা হয়তো আর একটু গ্রারো। আমার বাবা শ্রী দ্বিপেন্দ্র নাথ মৈত্র। বাবার জন্ম অধুনা বাংলাদেশ এর একটা ছোট গ্রাম, আতাইকুলা তে। সেই আতাইকুলা তে সবাই মৈত্র ই ছিল সেই সময়। বলতে পারো পুরো গ্রাম তাই ছিল একটা বৃহৎ একান্নবর্তী পরিবার। পরবর্তী কালে বাবার পার্টিশন এর আগেই পশ্চিম বাংলা তে চলে আসে। আতাইকুলা রাজশাহী জেলা র নাটোর সদরের একটা খুব ছোট গ্রাম। এতই ছোট যে আজকে গুগল এ খুঁজেও পাবে না। নাটোর এর কিন্তু ইতিহাস আছে , নাটোর এর রাজবাড়ী বাংলাদেশ এর এখনো একটা দেখার মতো জায়গা। তা এই নাটোরের সম্পর্কে ইন্টারনেট এ খুঁজতে গিয়েই পেলাম নাটোরের রাজাদের ইতিহাস যেটা শুরু হয় এক মৈত্র র ফ্যামিলি নিয়ে। তাই এটা হয়তো বেশ যুক্তি সঙ্গত ই হবে যদি আমি ধরি এই নাটোরে র রাজাদের সাথে লতায় পাতায় যুক্ত আমার ফ্যামিলি ইতিহাস।
মৈত্র র পদবীর ইতিহাস
মৈত্রেয়াকে বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে
ভাষা। তাকে মঙ্গোলিয়ায় মাইদারি বলা হয়, মিলো ইন
চীনা, কোরিয়ান ভাষায় মিরিক এবং জাপানি ভাষায় মিরোকু যা সংস্কৃত শব্দ 'মৈত্রি ' থেকে এসেছে।
মৈত্রেয় হ'ল 'মেটা' এবং 'ইয়া' বা শব্দের সংমিশ্রণ
'মৈত্রী 1 বৌদ্ধ দেবতা হিসাবে মৈত্রেয়ের উল্লেখ খুবই পরিচত।
মৈত্র এর সাথে মিত্রতারও একটা যোগ রয়েছে। মৈত্রেয় অবশ্যই বৌদ্ধদের এক অনন্য দেবতা যিনি অন্তত তিনটি স্বতন্ত্র ভূমিকা সহ বিভিন্ন সময়কাল এবং স্থান এ প্রকট। একটি অতীত এর সাধারণ মানুষ, অন্য রূপ বর্তমান এর বুদ্ধ যিনি তুষিতা রাজত্বের উপর রাজত্ব করেছিলেন এবং অন্য রূপ হলো ভবিষ্যৎ এর জমির বুদ্ধ।
আমি শুরু করি কামদেব মৈত্র কে নিয়ে।
*** ভাষা পাল্টে গেলো কারণ আমি গুগল ওসিআর দিয়ে পুরোনো লেখা গুলো কে ট্রান্সলেট করেছি। তাই এই ভাষা বলতেই পারো গুগলের ভাষা ****
ভারতের বিশালত্ব এসেছে শুধু আয়তন থেকে নয়, বৈচিত্র্য থেকেও। আর এই বৈচিত্র্য বোঝার জন্য সারা ভারত ঘুরতেই পারো, তবে তাতেও সব টা বোঝা যাবে না। ভারতের বৈচিত্র্য বোঝার সব থেকে ভালো রাস্তা বোধ হয়, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল এটলাস। একজন ভারতীয় এর কাছে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল এটলাস দেশ কে বোঝার সব থেকে বড়ো জানলা। অন্য দিকে সত্যি ই স্ট্যাটিসটিক্স এটলাস পড়া একটা বিরক্তিকর, সময় সাপেক্ষ্য জিনিস। আশা করবো আগামী দিন গুলোতে আমাদের স্ট্যাটিসটিকাল ডিপার্টমেন্ট ছবির মতো স্ট্যাটিসটিক্স দেবে।
২ হাজার চাকরির আবেদন করেছিল শঙ্কর এর জন অরণ্যর সোমনাথ। আজকেও দেখি ৬,০০,০০০+ এপ্লিকেশন জমা পরে শুধু ২০০ টা চাকরির জন্য। http://gulfnews.com/news/asia/india/more-than-600-000-vie-for-200-government-jobs-in-kerala-1.1916231
তাই আমার এই স্ট্যাটিসটিকাল এটলাস এর পাতা খুলতেই প্রথমে মনে হলো দেখি লেবার স্ট্যাটিসটিক্স এর টেবিল। পড়তে পড়তে আরো অনেক গ্রাফ, টেবিল দেখতে দেখতে চোখের সামনে আস্তে আসতে একগুচ্ছ ঝাপসা ছবি ভেসে উঠতে লাগলো। মনে পরে ১৯৮০ এর দুপুর এর দিন গুলো মনে পরে। সত্যি ১৯৮০ থেকে এই ২০১৬, ৩৬ বছরের এই রাস্তা টা কেমন ছিল ? এটলাস কি কিছু ইঙ্গিত দিতে পারবে ? আমরা তো সবই জানি, মনমোহন সিংহ, বাজপেয়ী, IT boom, আমাদের তো দেখা, নতুন কি জানতে পারবো যদি আমরা এই খুব বরক্তিকর এটলাস এর দিকে তাকিয়ে থাকি।
আচ্ছা এই কাজ টাই তো আমি করে দিচ্ছি, খেটে খুটে ছবি গ্রাফ লাগিয়ে একটা গল্প বলার চেষ্টা করছি - দেখুন মেলে কি না। না মিললে বাঙ্গালীর মতো সমালোচনা করা র অধিকার তো থাকলোই।
লোককের
কিছু কিছু ছবি সত্যি সত্যি ভাবায়। যেমন এই তলার গ্রাফ টা। আমরা যারা ১৯৯১ এর পরে চাকরি তে ঢুকেছি তাদের একটা ধারণা আছে যে আমাদের ওই দশক এর আগে চাকরি বলতে কিছু ছিল না। নিচের ছবি তা বলে না, সেটাই মুশকিল।
বেশ কিছু চমকে দেবার মতো স্ট্যাটিসটিক্স আছে এই রিপোর্ট এ। তার কিছু কিছু তুলে ধরি :
১৯৬১ সালে সরকারি চাকরি ছিল ৭০ লাখের কাছে, সেটা ২০০৭ সালে বেড়ে দাড়ায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ। একই সময় বেসরকারি চাকরি ৫০ লাখের থেকে বেড়ে ৯২ লক্ষ হয়।
বহু সেক্টর এ চাকরি তেমন কিছু বাড়ে নি। কন্ট্রাশন, আর খুচরো ব্যবস্যা তে আসলে চাকরি কমে গেছে এই সময় এ।
১৯৯১ এর পর থেকে তো চাকরি প্রায় কিছুই বাড়ে নি।
প্রশ্ন হলো এই সময় এ তো জনসংখ্যা বেড়েছে, তাহলে সেটা চাকরি না বাড়লে তো প্রবল ভাবে বেকারি বেড়ে যাবে। আমাদের অভিজ্ঞতা তো তেমন দেখাচ্ছে না। তাহলে কোন আলাদিনের প্রদীপ এই বেকারির ঝড় সামলাচ্ছে ?
আর একটা চার্ট দেখা যাক ! এটা হলো ভারত এর বেকারের স্ট্যাটিস্টিক্স , প্রতি ১০০০ জনের এর হিসাবে।
আমি এটার একটা ছোট গ্রাফ করেছি। সব দেশের সরকারের কাছে বেকারির সংখ্যা বাড়া একটা লজ্জার বিষয়। তাই ভারতের মতো দেশ এ এই সংখ্যা টা নিয়ে অনেক লুকোছুপি চলবে সেটাই প্রত্যাশিত। ১৯৮৭-৮৮ সালের সংখ্যা তে দেখছি গ্রামে আর শহরে দুটো জায়গাতেই চাকরির হাহা কার। সেই সময় ও শহরের বেকারির সংখ্যা ৬% এর বেশি হয় নি। ভারতের বেকারির সংখ্যা ৫-৬ % এটা আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞত্যার সাথে মেলে না।
তাও বলতেই হবে ১৯৯১ এর পর থেকে শহুরে বেকার এর সংখ্যা কমতে থাকছে। এই চার্ট এর বাইরেও সরকারী যা ব্যাখ্যা রয়েছে সেই গুলোও বেশ আলোকপাত করে:
প্রতি ১০০০ জনের ভিতরে ৩৫০ জনের মতোর কর্ম সংস্থান আছে।
প্রতি ৪ জন পুরুষের তুলনাতে একজন মহিলা চাকরি করছেন।
প্রতি ১০০০ জন কর্মীর ভিতর ৪৪০ জন হলেন সেলফ এমপ্লয়েড। সেটা প্রায় ৪৪% . উন্নত দেশ এ এই সংখ্যা টা ২০% এর নিচেই থাকে। কানাডা তে ৮%, সিঙ্গাপুর এ ১৫%, আমেরিকা তে ৭%. ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক এর হিসাবে তো ভারত এ সেলফ এমপ্লয়েড হলো ৮১%!!
সত্যজিৎ এর জনঅরণ্য এর সোমনাথ কে উৎপল দত্ত এর বলা সংলাপ মনে পরে যাচ্ছে। দেশ এর বিপুল মানুষ সেলফ এমপ্লয়েড। যারা বলি এই দেশ এর মানুষ কর্ম বিমুখ তখন এই ছবি টা সত্যি মনে থাকে না।
এমনকি সরকারি স্ট্যাটিসটিক্স এর পরিষ্কার গ্রাম এ কাজ বাড়ছে না। কেন বাড়ছে না তার অনেক কারণ হতে পারে। কিন্ত্যু শেষ কথা হলো কাজ বাড়ছে না।
এই বিশাল সংখ্যা র লোক গ্রাম থেকে শহরে আসছে। দেশ এর গ্রামে থাকা লোকের শতকরা হার ক্রমাগত কমছে (তার একটা কারণ এটাও বটে যে অনেক গ্রাম আধা শহরে পরিণত হয়েছে). গ্রাম থেকে শহর এ আসার পরেও শহরে বেকারির সংখ্যা কমছে সেটাই পরিষ্কার বোঝাচ্ছে যে অন্ততঃ শহরে কিছু কাজ বেড়েছে শেষ ২০-২৫ বছরে।
এটা তো বলবেনই যে এই সব কিছু-ই জানা। তা মশাই, আপনি কি জানেন তা তো জানি না - তাই হয়তো একটা দুটো জিনিস আপনি ২ বার শুনবেন। ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
এই লেখা টা হারিয়ে যাওয়া কিছু বই নিয়ে লেখা। প্রথমে শুরু করি ১৯৪৩ এর একটা বই নিয়ে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এর লেখা ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এর লেখা এই বইটার নাম "পঞ্চাশের মন্বন্তর" । পরে ইচ্ছা আছে আরো কিছু বইয়ের আলোচনা করা আর পুরোনো কিছু লেখা ও এই লেখা টার সাথে যুক্ত করার । ১৯৪২ এ বাংলার পরিস্থিতি খুবই জটিল। ২য় বিশ্বযুদ্ধ তখন বাংলার ঘরের কাছে চলে এসেছে। সিঙ্গাপুর, বার্মার পতনের পরে ইংরেজ দের নিজেদের ওপরে আস্থা চলে যাচ্ছিলো। একটা ভয় দানা বেঁধে উঠছিলো যে জাপানি রা বাংলা দিয়ে ভারত এর মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে। সেই জাপানি আক্রমণ কে ঠেকানোর জন্য চেষ্টা শুরু হলো নানা ভাবে। সৈন্যদের জন্য খাবার মজুত করা থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলা তে খাবার এর সাপ্লাই কম করা। সেই পটভূমিকাতে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেলো। সেই ক্ষয় এর একটা সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার জন্য শ্যামাপ্রসাদ এর এই বইটার জুড়ি নেই। বাংলাতে দুর্ভিক্ষ নিয়ে লেখা বই আরো (বলতেই হবে আরো অনেক লেখার সুযোগ ছিল) রয়েছে। অমর্ত্য সেন ইত্যাদির ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এর লেখা অনেক প্রবন্ধ আছে। আমার প্রিয় বইটি জনম মুখার্জী এর লেখা "হাঙরি বেঙ্গল " ।
https://deepblue.lib.umich.edu/bitstream/handle/2027.42/86383/jsmuk_1.pdf শ্যামাপ্রসাদ এর বই এ যাবার আগে বলে নি জনম মুখার্জী কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ এর সম্পর্কে মধুর কিছু বলেন নি। তবে লেখিকা শ্যামাপ্রসাদ এর বইটি পড়েন নি। পড়লে অন্তত শ্যামাপ্রসাদ এর বক্তব্য জানতে পারতেন কিছু কিছু মুহূর্ত বা ঘটনা গুলো নিয়ে যেখানে উনি শ্যামাপ্রসাদ এর সমালোচনা করলেন। তবে শ্যামাপ্রসাদ এর এই বইটা সম্পূর্ণ ভাবেই আলাদা। অন্য দেড় মতো এটা নিছক ফিরে দেখা নয়। ১৯৪৩ এ বসেই দুর্ভিক্ষ নিয়ে লেখা। তাই এটা নিছক ইতিহাস নয়। লেখার স্টাইল এর ভিতর কবিত্ব করার চেষ্টা নেই, তা হলেও লেখক এর সাবলীল ভাষা এই ছোট্ট ১০০+ পাতার বই টিকে সুপাঠ্য করেছে। বইয়ের মাঝের দিকে এসে লেখক ওনার জেলা জেলা ঘোরার অভিজ্ঞতা বলছেন। সেই বর্ণনার সাবলীলতা গৌরকিশোর ঘোষ এর রিপোর্টিং এর কথা মনে করিয়ে দেয়। আর এটা নিছক তত্ত্বর কচকচি নয়, যদিও শ্যামাপ্রসাদ দুর্ভিক্ষ এর কারণ গুলো ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। লেখক বইটাতে ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এর সাথে বাংলার অন্য দুর্ভিক্ষ এর আলোচনা করে বারে বারে দেখিয়েছেন কি কি ব্যার্থতা বাংলা কে এই রকম ভয়াবহ অবস্থার দিকে নিয়ে গিয়েছিলো। আমার হাতের বইটি হলো ৩য় সংস্করণ, আগের দুটি সংস্করণ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছিল। প্রথম সংস্করণ তো শেষ হয়েছিল মাত্র ৩ সপ্তাহে। বই বিক্রি এর পয়সা দিয়ে রাজ্ বন্দিদের পরীক্ষার ফী জমা দেওয়া হয়েছিল।
এই বার বই এর কথা তে আসা যাক। ভূমিকা ইত্যাদির পরে বই টার শুরু হচ্ছে কিছু ছবি দিয়ে। প্রথম ছবি তে এক মহিলা এক বাচ্চা কে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে, বুকের উপরে কাপড় নেই। যৎসামান্য কাপড়ে পরণের নিম্নাঙ্গ আবৃত। বোধ হয় প্রতি টা হাড় গোনা যাবে। ছবির তলাতে লেখক লিখেছেন "ঘর গৃহস্থালী লজ্জা-সঙ্কোচ সমস্ত গিয়াছে, চাষী-মাতা কলিকাতার পথে আসিয়া দাঁড়াইয়াছেন। শুষ্ক বুকে একফোটা দুধ নাই, সন্তানকে বাঁচাবে কে ? " ব্যাক্তি লজ্জা কে জাতির লজ্জা তে পরিণত করতে লেখক শুধু মাত্র দুটি বাক্য নিয়েছেন !! সেই ছবি স্ক্যান এ একদমই ভালো আসে নি বলে দিতে পারলাম না , তবে লাইফ ম্যাগাজিনে সেই সময় এর বেশ কিছু ছবি বেরিয়েছিল। ইন্টারনেট খুঁজলে সেই ছবি পাওয়া একদমই মুশকিল না।
তবে শ্যামাপ্রসাদ এর বই এর গুরুত্ব হলো বাংলার পাঠক দের হাতে নিজেদের ভাষা তে এই সময় টা শুধু লেখা তে নয়, ছবি তেও তুলে ধরা। মনে রাখতে হবে সেই যুগের কাগজে ও কিনত্যু দুর্ভিক্ষ এর ছবি বেরোতো না। এর পরে মূল লেখা শুরু হচ্ছে বঙ্কিম এর আনন্দমঠ এর দুর্ভিক্ষ এর বর্ণনা দিয়ে। শুরুতেই লেখক আলোচনা করলেন দুর্ভিক্ষ এর কারণ এর প্রচলিত ব্যাখ্যা গুলো নিয়ে। প্রায় ৩০ পাতার এই আলোচনা বিস্তারিত করলাম না কারণ সেটা বই এর লেখার পুনরাবৃত্তি হয়ে যাবে। আমি বরং একটা চেষ্টা করি শ্যামাপ্রসাদ আর অমর্ত্য কে মিলিয়ে দেওয়ার। শ্যামাপ্রসাদ বলছেন মূল্য বৃদ্ধি ই দুর্ভিক্ষ এর প্রধান কারণ। বাকি গুলো উনি বিস্তারিত আলোচনা করলেও মূল্য বৃদ্ধি এর ওপরে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এই মূল্য বৃদ্ধির এর ওপরে। এবার অমর্ত্য এর লেখা এর একটা চার্ট তুলে ধরি। এই ওপরের চার্ট দেখলে বোঝা যায় কেন চালের জন্য সেই দিন হাহাকার পরে গিয়েছিলো। চালের দাম বাড়লো ৫ গুন শুধু এক বছরে!! ভাবতে পারেন আজকের দিনে যদি মাসে মাসে এই ভাবে চাল এর দাম বাড়ে !!! এই মূল্য বৃদ্ধির কারণ নিয়ে অমর্ত্য সেন অনেক আলোচনা করেছেন। কেন এতো দাম বাড়লো আর কার দায় তার জন্য সেই নিয়ে শ্যামাপ্রসাদ বিস্তারিত আলোচনা করলেন। শ্যামাপ্রসাদের একটা বক্তব্য রেখেছেন এখানে খুব প্রাসঙ্গিক। যুদ্ধের ওই সময় সরকারই সব থেকে বড় মজুতদার (যুদ্ধের প্রয়োজনে) আর সরকার ই আবার সব থেকে বড় চাল আর গমের সব থেকে বড় ক্রেতা। এই পরিস্থিতি এর দায়িত্ব তাই ব্রিটিশ সরকার আর সুরাবর্দি এর ওপরেই এসে পরে।
বই এর শেষ দিকটা য় লেখক আলোচনা করলেন কি কি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় বাংলার খাদ্য পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক উন্নতির জন্য। আজকে হোয়াটস্যাপ, ফেইসবুক এর যুগে আমরা ভাবতেই পারি এমন পরিস্থিতি আর আসবে না। সত্যি কি তাই !! আমার তো মনে হয় ওই ১৯৪৩ এর মতো পরিস্থিতি আবারো আমাদের ফিরে আসতেই পারে !! ১৯৪৩ এর পরেও স্বাধীন ভারত এ খাদ্য আন্দোলন হয়েছে। শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধীর সরকার এর যাই যাই রব উঠেছিল খাদ্যভাব এর জন্য। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকার এতো তাড়াতাড়ি হয়তো পড়তো না যদি গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব প্রকট না হতো। স্বাধীন বাংলাদেশ এ ১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষ মুজিব সরকার এর ওপর এর সব চাকচিক্য তুলে দিয়েছিলো। দেশ এর অবিসংবাদী নায়ক এর ভিলেন হতে বেশি সময় লাগে নি। ডেমোক্রেসি তে দুর্ভিক্ষ হবে না বলে অমর্ত্য আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। ডেমোক্রেসি এর সংজ্ঞা হয়তো দেশে দেশে এক দম এক নয়। ১৯৪৩ এর বাংলা তে সুরাবর্দি এর সরকার একটা নির্বাচিত সরকার ছিল। হয়তো সুরাবর্দির সরকার অমর্ত্য এর সংজ্ঞা মতে গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না কারণ অনেক কিছুই তখনো চলতো লন্ডন সরকার এর হুকুম মেনে। আজকের দিনেও ভারত এর বহু মানুষ এর দিন চলে অর্ধাহারে বা একদমই কুখাদ্য খেয়ে। আজকের কাগজ এ কি আমরা তার উল্লেখ দেখি ? পরিস্থিতি বুঝতে গেলে যেতে হবে আমাদের একটু গ্রাম এর দিকে, যেতে হবে শহর এর এমন সব দিকে যেখানে আমরা যাই না বা যেতে চাই না। ১৯৪৩ ও ঠিক তেমন টাই ছিল। সেদিন ১৫ই মে ১৯৪৩। কোলকাতার রাস্তা তে অনাহারী মানুষ এর দল। অমৃত বাজার এর পাতা তে (তাও ভিতরের পাতা তে ) এক নাম মাত্র উল্লেখ।
২০১৭ এর সালের ২য় দিন, ২রা জানুয়ারী তে বসে এই লেখা লিখছি। নতুন বছরের নতুন আশা। আশা যে আগের ভুল হবে না। সেই ভুল না হলেই ভালো। শ্যামাপ্রসাদ এর ভুলে যাওয়া বই কেও আর একবার নতুন করে মনে করলাম। এই বই হয়তো সেই ভুলের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবে।
যদি বলা হয় টাইম ট্রাভেল করতে করতে তুমি শুধু একবারই পিছনের দিকে যেতে পারো তাহলে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ এর এই তিনটি বছর এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর কোনো বছর হতেই পারে না।
কোটি কোটি মানুষ এর ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছিল এই তিন তে বছরে। টাইম ট্রাভেল এর উপায় যখন নেই তখন আমাদের নির্ভর করতেই হবে ওই সময় এর কাগজ এর ওপরে।
সে দিনের এক একটা দিন এর ঘটনা আজও আমাদের জীবন নির্ধারণ করছে। অবিশ্বাষ্য দ্রুততায় ঘটে চলে ঘটনাস্রোত।
১৯৪৬
শুরু টা করা যাক স্বাধীনতার ঠিক এক বছর আগে থেকে। ১৯৪৬ এর ১৫ই অগাস্ট।
সেই দিনের শেষেই জিন্নাহ ডাক দিলেন ডাইরেক্ট অ্যাকশন এর। পরের দিন টা ভারত এর গত ১০০০ বছরের ইতিহাস এর হয়তো সব থেকে লজ্জার দিন।
১৭ই অগাস্ট এর কাগজ খুললে দেখতে পাই প্রথমেই বেরিয়েছে জিন্নাহ আর নেহেরু এর আলোচনা ভেস্তে যাবার কথা। কাগজ এর অন্য দিকে কলকাতার দাঙ্গার কথা।
কাগজ এর তোলার দিকে রয়েছে নেহেরু এর বক্তব্য। নেহেরু কিন্তু সেই দিন কলকাতা যান নি। নেহেরু এর ক্ষমতা দখল এর মোহ সেই দিন জিন্নাহ এর থেকে কম কিছু ছিল না। নেহেরুর রাজনৈতিক স্থবিরতা এর আগেও আর এর পরেও স্বাধীন ভারত দেখেছে। তবে ১৭ ই অগাস্ট ১৯৪৬ এর কাগজ বোধ হয় ভদ্রলোকের বাচন সর্বশ্যটা সব থেকে ভালো তুলে ধরেছে।
"Midnight furies" নামের বিখ্যাত বইয়ে N. Hajari লিখেছেন সেই দিনটা নিয়ে।
সেই দিনের আরো কিছু বর্ণনা দেবো। নিচের অংশটা তখনকার পুলিশ রিপোর্ট থেকে নেয়াও (
By late in the afternoon the situation changed and the persons involved on both sides were gwallahs, rickshaw pullers, teashop wallahs, pan berri wallahs, cart pullers, cart men, goondas of the worst type. Soon after midnight on the 16/17th these gangs fought out the most desperate battles, murder and butchery of a worst type were carried on in the side lanes and byways of North Calcutta. Round Vivekananda Road/ Central Ave., crossing about 50 Hindu Behari rickshaw pullers were caught in a cul-de-sac and butchered. Further up Central Ave., round the temple which stands in the middle, a party of some 30 Mohamedans were killed. It was during the period midnight 16/17th and 0700 hours on the 17th that most of the casualties occurred. All the roads in the affected areas were red with bricks. Our patrols were out but due to the tremendous fights that were going on it was impossible for us to force our way into the areas in which the main killings were taking place. The police opened fire in Harrison Road at about 1100 hours on 16 Aug 1946, 2 rounds of buck shot and and Barnes and Smith emptied their pistols into the crowd. The crowd dispersed, formed up in Bow Bazaar St and a fight started between the Hindus in Bow Bazaar St. and the Muslims coming up from Lower Circular Rd. I was there at the time and the police finally dispersed the crowd with tear gas. By 1200 hours there were fights in every street and alley from Sealdah to Shambazar. Eastern Command Intelligence Centre jeeps dispersed some of these crowds and stopped the fights without firing, but as soon as we had gone the fights started again. By 1400 hours on the 16th Government were considering calling out troops but the police had only fired the above mentioned number of rounds.
৫ ডিসেম্বর
সেই দিনের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর হেডলাইন - "Talks Begin in London Viceroy reports to Premier and Cabinet Mission" . আমাদের দূর্ভাগ্য যে আমরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। পেলে দেখতাম সেই বৈঠক কি ভাবে আমাদের দেশ এর ভাগ্য গড়ে দেবে। মুসলিম লীগ এর জিন্নাহ, কংগ্রেস এর নেহেরু, বল্লভ ভাই পাটেল সেই দিনের বৈঠক এ মুখোমুখি। সেই বৈঠক ভবিষ্যৎ ভারত, পাকিস্তান বিভাজন এর পথ তৈরী করে দেবে। ১৯৪৬ এর সেই দিনের কাগজ বলছে "The full conference, it is thought, can not last more than two days as Friday evening or Saturday morning is about the latest that the Congress leader's departure can be delayed if they are to reach Delhi with a slight breathing space before the start of the Constituent Assembly on Monday." ভেবে অবাক ই লাগে যে এত গুরুত্ব পূর্ণ আলোচনা যেখানে দরাদরি ই সব সেই খানে তাড়াহুড়ো কি সত্যি দরকার ছিল ? সেই ভাবনা তা যে নিতান্ত অসার না সেটা বোঝা যাবে আর কিছু দিন পরেই।
যাক ২ দিনের বাদের ৭ ডিসেম্বর এর কাগজ এ বেরোলো যে ব্রিটিশ গভারমেন্ট খুব কষ্ট পেয়েছেন মুসলিম লীগ এর আচরণে।
পরের দিনের কাগজ এই বেরোলো এই হেডলাইন -
"British Govt. Gives Jinnah the Veto. No forcing of New Constitution on Unwilling Parts of Country". পরের দিন যখন নেহেরু কে প্রশ্ন করা হলো, নেহেরু বললেন এই মুহুর্তে কিছু বলা যাবে না , সব কিছু এখনো ঠিক হই নি। লোকে যেন কোনো ম্যাজিক আশা না করে।
সেই দিনের কাগজ এ আরো ছিল কংগ্রেস কিছু তেই ব্রিটিশ সরকার এর এই ডিগবাজি মেনে নেবে না, নেহেরু কে কংগ্রেস লিডার রা প্রশ্ন করেছেন কি করে নেহেরু কোনো আলোচনা ছাড়া ভারত এর রাজদূত নিয়োগ করছেন। এই সব এ চাপে পরে বোধ হই নেহেরু বললেন উনি পদ ছাড়ার কথা ভাবছেন। আরো বললেন এই লন্ডন বৈঠক এর মানেই নেই, এই বৈঠক হলে ভারত এ করতে হত !!! প্রশ্ন উঠবেই তাহলে উনি গেলেন কেন!! যাই হোক , কাগজ এর তলার দিকে একটা খবর ও বেরোলো - এই নিয়ে গান্ধীর মতামত নেওয়া হবে।
অন্য দিকের আর একটা কথাও বলা উচিত। এতে ঘটনার গতি বুঝতে সুবিধা হবে। ব্রিটিশ সরকার ভারতের স্বাধীনতা দাবি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১৯৪৬ সালে একটি মন্ত্রিপরিষদ কমিশন গঠন করে। পরিকল্পনা ছিল তৃতীয় দলের স্টেট গুলো ভাগ হয়ে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। আসাম পড়েছিল বাংলার সঙ্গে। গোপীনাথ বরদলই বুঝতেই পারলেন বাংলার তুলনায় সংখ্যালঘু হয়ে যাবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মতামত - আসাম-এর জন্য অশুভ লক্ষণ। বরদলই আলোচনা করতে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। নেহেরু র হাতে ছেড়ে দিলে আসাম সেই দিন পূর্ব পাকিস্তান এর ভিতর এ যেতই। নেহেরু র ভারত এর বিভিন্ন অঞ্চল সম্পর্কে ধারণা যে কি ভয়াভব কম ছিল সেই ১৯৪৬ এর কাগজ এর প্রতি দিনের পাতা তে জলের মত পরিষ্কার। গোপীনাথ বরদলই একতরফা ভাবে ডিক্লেয়ার করে দিলেন, অসম গণ আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসাম এর দশ প্রতিনিধিরা কোন গ্রুপ এ যোগদান ছাড়া তাদের নিজস্ব সংবিধান গঠন করবে। গান্ধী এর ভারত সম্পর্কে ধারণা নেহেরু এর থেকে অনেক পরিষ্কার ছিল, গান্ধী বুঝতে পারলেন আসাম এর ওপরে জোর খাটানো যাবে না, গেলেও কোনো লাভ হবে না। গোপীনাথ বরদলই ই সেখানে কংগ্রেস এর মুখ। ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৬ এ র কাগজ এ হেডলাইন এ গোপীনাথ এর লড়াই এর জয় এর ইঙ্গিত
দেখার জিনিস গান্ধী এর কথা গুলো তে একটা দারুন twist থাকত - " Province Must Uphold Its Soul Against Whole World". আজকে বোঝাই মুশকিল উনি ঠিক কি বলতে চাইছিলেন। ভারত ১৯৪৭ এ স্বাধীনতা পেয়েছিল - বোধ হই আমাদের নেতা রা ক্ষমতার দখল নেবার জন্য বড় ব্যাকুল হয়েছিলেন - আর ১০ বছর অপেখ্যা করলে যে অনেক প্রাণহানি এড়ানো যেত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেখানে গোপীনাথ বরদলই এর মত লোক ছিলেন, সেই স্টেট গুলো কিছু টা হলেও নেহেরু এর অপদার্থতার হাত থেকে বেচে গিয়েছিল।
ফিরে আসি সেই বৈঠক এর কথা তেই - বছর শেষ হতে চলল, ৩০ ডিসেম্বর ১৯৪৬ এর কাগজ এ বেরোলো, কংগ্রেস মানবে না বৈঠক এর স্টেটমেন্ট।
পরের ৬ মাস হলো সেই কংগ্রেস এর ডিগবাজি এর ইতিহাস। এর পরে গান্ধীজি নিজেই নেমে পড়লেন - কোনো রকম আকার ইঙ্গিত না, সোজা সাপটা বললেন ওটা মানতেই হবে, জহর কথা দিয়ে এসেছে। সেই গুলোহইতো ভুলে যাওয়া ইতিহাস , তবে গোপন ইতিহাস না। পরের ৩-৪ মাসের প্রতিদিনের কাগজ এর হেডলাইন সেই ইতিহাস বহন করে।
১৯৪৭
এই দেখতে দেখতে ১৯৪৭ চলে এলো। পলাশীর ১৯০ বছর পরে, বহু লোককের বহু ত্যাগ, বহু জল্পনা কল্পনার পরে এসে গেল সেই ১৯৪৭।
1947 একটা সত্যিকারের অন্য রকম বছর, অন্তত ভারতের ইতিহাসে। প্রতি দিন যেন এগিয়ে যাচ্ছে একটা চরম মুহুর্তের দিকে। সেই টান টান করা টেনসন প্রতি দিনের কাগজের প্রথম পাতায় - যদি বলি দেশ স্বাধীনতার আনন্দে থর থর করে কাপছিলো তাহলে সেটা রোমান্টিক হতে পারে কিন্তু সত্যি হবে না। প্রতি দিনের কাগজ খুললে অন্তত বাধনহারা আনন্দের চিহ্ন নেই - যা আছে তা চাপা উত্তেজনা।
জানুয়ারী এর পাতা উল্টাতে থাকি।
১ জানুয়ারী - No More Imperial Honours and Titles for Indians ২ জানুয়ারী - Mahatma's Historic Walking Tour Begins Today ৩ জানুয়ারী -Mahatma Launches great experiment in Non-violence ৪ জানুয়ারী - Science must come to service of Hungry Millions - Nehru
৫ জানুয়ারী - Momentous A.I.C.C session opens today ৬ জানুয়ারী - Congress cabinet commend acceptance of December 6 statement
৭ জানুয়ারী - A.I.C.C accepts December 6 statement
৮ জানুয়ারী - Assam to act alone in future contingencies ৯ জানুয়ারী - Mahatma's march in Quest of communal peace ১০ জানুয়ারী - Assam to abide by Delhi decision of Congress ১১ জানুয়ারী - Suharwardy votes 'No Confidence' in Congress ১২ জানুয়ারী - Cawnpore firing figures in U.P assembly ১৩ জানুয়ারী - Need for reorientation of congress policy - Moulana Azad
১৪ জানুয়ারী - New turn in Cawnpore Labor Crisis - about lakh workers thrown out of employment ১৫ জানুয়ারী - Strikes and lockouts made illegal ১৬ জানুয়ারী - Countrywide searches of communist party offices State of "rebellion" in central plains of Burma
১৭ জানুয়ারী - Suharwardy's unwanted presence at police H.Q ১৮ জানুয়ারী - Sikh threat to withdraw from constituent assembly ১৯ জানুয়ারী - Situation Fast Deteriorating Cawnpore strike ২০ জানুয়ারী - Stalin sees no possibility of Third world war
২৩ জানুয়ারী - India decides to be republic Netaji's picture at Cellular Jail, Port Blair Police open fire again on crowds in Calcutta
২৪ জানুয়ারী - Cawnpore strike called off
২৫ জানুয়ারী - Private communal armies are dangerous for peace ২৬ জানুয়ারী -India's Independence Pledge Mahatma's glowing tributes to Subhas Chandra Bose
২৭ জানুয়ারী -Provinces right to opt out after first elections Muslim League urged to join constituent assembly
২৮ জানুয়ারী - Five hundred arrests in Punjab - League definace of Govt. Ban continues ২৯ জানুয়ারী - Punjab ban on R.S.S.S and Muslim National Guards Lifted
৩০ জানুয়ারী - States ready to enter Indian Union
বছর এর শুরু হচ্ছে এই খবর দিয়ে যে আর রায় বাহাদুর খেতাব দেবো হবে না। সেই খবর এ সেদিন কিছু প্রতায়াষীর স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল। পরের কিছু দিন কাগজ ধরে রাখলো গান্ধীর পদযাত্রা এর কাহিনী। কংগ্রেস এর সব নেতা ব্যস্ত দিল্লি তে আলোচনায় , অন্য দিকে গান্ধী পূর্ব বাংলা তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শান্তি আনতে। তবে তখন বড় দেরী হয়ে গেছে।দিকে দিকে বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের নিজেদের 'আর্মি' তৈরী করেছে। মুসলিম, হিন্দু, শিখ - সবার নিজেদের আর্মি (২৫ জানুয়ারী ১৯৪৭ এর হেডলাইন)। সেই আর্মি এর রূপ কেমন ছিল ? কিছু টা অনুমান করতে পারি শরদিন্দু এর আদিম রিপু থেকে। শরদিন্দু ভাষা কে নিজের ভাষা তে তুলে ধরার কোনো মানেই হয় না - তুলে দিছি আদিম রিপুর প্রথম পাতার কিছু টা
জানুয়ারী এর প্রথম সপ্তাহতে বার বার এসেছে AICC এর অধিবেশন এর কথা। এই লেখার শুরু করেছিলাম ৫ই ডিসেম্বর থেকে - কারণ ভারতের এই ক্রান্তি মুহুর্তে একটা সিম্বলিক দিন দেখতে গেলে বোধ হই ৬ই ডিসেম্বর ১৯৪৬ এর অধিবেশন এর দিন টাই নিতে হবে :
১. সেই দিনের আলোচনা বার বার ফিরে এসেছে পরের ৬ মাস ধরে
২. দেশ ভাগের সেটাই সূচনা
৩. খুব অল্প কিছু লোককের প্রায় ৫০ কোটি মানুস এর ভাগ্য নির্ধারণ করার এমন নিদর্শন পৃথিবীর ইতিহাসেও দুর্লভ
আগেই বলেছি আসাম এর কথা। ১৯৪৭ এর জানুয়ারী এর প্রথম দিকের কাগজের হেডলাইনস বহণ করে চলেছে সেই দিনের গৌতম বরদুলাই এর সংগ্রাম এর কথা (৮ জানুয়ারী - Assam to act alone in future contingencies)
অন্য দিকে কোন অঞ্চল কোন দিকে যাবে তা পুরো ঠিক হতে ১৯৪৭ এর জুন হয়ে গিয়েছিল। ভাবলে অবাক লাগে, জুন মাসে বাংলার ভাগ ঠিক হলো, অগাস্ট এ পার্টিশন হয়ে গেল - মাত্র ২ মাস !! ২ মাস দিলেন নেতারা ২৫ লক্ষ্য হিন্দু উদ্বাস্তু দের একদিক থেকে অন্য দিকে যাবার!! পরের ৬ মাস কোন তা ন্যাশনাল ফ্লাগ হবে, কোন কোন মন্ত্রী হবেন, রাজাদের কি হবে ঠিক করতে করতে চলে গেল। দেশ এর অর্থনীতি এমনিতেই তলানি তে ছিল, আরো কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়া আরো তলানিতে চলে গেল। নেহেরু এর প্রধানমন্ত্রী হবার ব্যাগ্র তার মাশুল বহু দিন ধরে সবাই কে দিতে হবে - ২ ই বিশ্বযুদ্ধ এর পরে ইংল্যান্ড এ চার্চিল কে চলে যেতে হয়েছিল , ছোট ভুল ও লোকে ক্ষমা করে নি। আমাদের মাশুল দিতেই হবে এত বড় ভুল এর পরেও কাউকে দেব্ তুল্য নেতার আসনে বসিয়ে রাখার জন্য।
১৯৪৭ এর শেষ ৩ তে মাস
স্বাধীনতার দিন কেটে যাবার পরেই সব খবর শেষ হয়ে গেলো এমন তো নয়। অগাস্ট পেরিয়ে অক্টোবর এ এসে গেলাম। পুরো অক্টোবর এর প্রতিটা দিন থর থর উত্তেজনাতে কাঁপছে। একদিকে দাঙ্গা, শরণার্থী তো অন্য দিকে কাশ্মীর, হায়দরাবাদ।
২৩ অক্টোবরের এর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর কার্টুন অসাধারণ ভাবে সেই পুরো মাস টাকে একটি ছবিতেই ধরেছে
সেই সময় টা ছিল স্বাধীন ভারত আর স্বাধীন পাকিস্তানের টানাপড়েন এর সময়। মনে রাখতে হবে দেশ স্বাধীন হলেও দেশীয় রাজ্য গুলো তখনও ভারত বা পাকিস্তানের ভিতরে ঢোকে নি। প্রতি দিনের কাগজ এর থরো থরো উত্তেজনা এই রাজ্য গুলোর কি ভবিষ্যৎ হবে সেই নিয়ে।
তার মধ্যে একটা ঘটনা আজকের দিনেও ৭০ বছর পরেও সমাধান হয় নি - কাশ্মীর। কাশ্মীর এর সমস্যা এর শুরু দেখতে গেলে ১৯৪৭ এর অক্টোবর এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস আর কিছু নেই।
প্রায় সব কিছুর শুরু ওই মাস থেকে। প্রথমের বলে রাখি ১৯৪৭ এর স্বাধীনতার পরেও কাশ্মীর আলাদা ই থাকে ভারত আর পাকিস্তান এর বাইরে দুজনের প্রতিবেশী স্বাধীন রাজ্য হিসাবে। কাশ্মীর রাজা ১৯৪৭ এর অগাস্ট এ চুক্তি করেছিলেন ভারত আর পাকিস্তান এর সাথে যে কাশ্মীর নিরপেক্ষ থাকবে। কিন্তু দু মাস এ সব কিছু পাল্টে গেলো। ১৯৪৭ এর অগাস্ট এর পরে যখন সারা পাকিস্তান জুড়ে জোরদার হিন্দু বিরোধী হাওয়া কাশ্মীর এ আসতেই অশান্তি শুরু হলো। করে ১৯৪৭ এর ২০ই অক্টোবর - ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর প্রথম পাতা।
কাগজ এর পাতাতে আরো বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। কাশ্মীর অভিযোগ জানাচ্ছে যে পাকিস্তান রেডিও থেকে ঘন ঘন কাশ্মীর বিরোধী প্রচার চলছে, কাশ্মীর এর মাল সাপ্লাই ও পাকিস্তান আটকে দিচ্ছে, প্রচুর লোককের হাতে পাকিস্তান অস্ত্রও তুলে দিচ্ছে। কাশ্মীর এর ব্যাঙ্ক এর ফিক্সড ডিপোজিট পাকিস্তান ভাঙ্গাতে দিচ্ছে না। সেই দিন কাশ্মীর সরকার বিবৃতি দিলো যে এমন টা চলতেই থাকলে কাশ্মীর ভারত এর থেকে সাহায্য নিতে বাধ্য হবে।
২৬শে অক্টোবর এর কাগজ এর প্রথম পাতাতে বিশাল হেডলাইন দলে দলে আফ্রিদি রা ট্রাক এ অস্ত্র নিয়ে কাশ্মীর এ ঢুকছে। এরা আসলে কাশ্মীর এর গ্রাম এর নানা উপজাতি। ১৯৪৭ এ কাশ্মীর এর এই গ্রাম গুলোর সত্যি কি অবস্থা সেটা এই কাগজ গুলোতে নেই। ধরে নিতে দোষ নেই অবস্থা খুবই খারাপ - খাবার নেই, টাকা নেই। সেই দিনের কাগজ এ পাকিস্তান থেকে জিন্নাহ এর বিবৃতি ও বেরোলো, ২০ তারিখ এর কাশ্মীর সরকার এর বিবৃতিকে খণ্ডন করে। আমি পড়ে দেখলাম যে পাকিস্তান কাশ্মীর এর বিবৃতি কে ঠিক অসত্য বলে নি - তবে সমস্যার জন্য নিজেদের দোষ স্বীকার ও করে নি। যেমন পাকিস্তান এর বক্তব্য অনুসারে লাহোর এর ব্যাঙ্ক তখন ও ভারত সরকার এর অধীন এ, তাই ব্যাঙ্ক যদি টাকা দিতে অস্বীকার করে তার দায় পরে ভারত সরকার এর ওপর। এই কথা টা সত্যি যে ১৯৪৭ এ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভারত আর পাকিস্তান দুটোরই সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করতো ১৯৪৮ এর ডিসেম্বর এ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এর মোট গোল্ড রিজার্ভ ভারত আর পাকিস্তান এর ভিতর ৭০:৩০ ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়।
আবার পরের দিনের কাগজ (২৭ এ অক্টোবর) এ দেখছি আফ্রিদি রা কাশ্মীর শহর এর ৩০ কিলোমিটার এর ভিতর চলে এসেছে। ২৮ অক্টোবর ঐতিহাসিক হেডলাইন।
সেই দিন থেকে কাশ্মীর ভারতের অংশ হলো আর ৭০ বছরের বিবাদের ইতিহাসও শুরু হলো। আজকের দিনে মনে হতে পারে সেই সময় মাসের পর মাস কাশ্মীর কাগজ এর প্রথম হেডলাইন ছিল - ভুল !! ৭ই অক্টোবর এর বিশাল হেডলাইন ছিল হায়দরাবাদ নিয়ে।
আজকে বোধ হয় আমরা হায়দরাবাদ সেই সময় এর ঘটনা পুরো ভুলেই গেছি। সেই দিন কিন্তু হায়দরাবাদ ছিল কাশ্মীর এর থেকেও বড়ো নিউজ।
দেখতে দেখতে এসে গেলো ডিসেম্বর এর শেষ দিন। ৩১ এ ডিসেম্বর এর অমৃত বাজার পত্রিকা এর হেডলাইন এ দেখছি সেই কাশ্মীর ফিরে এসেছে।
ভারতের সেই সিকিউরিটি কাউন্সিল এর যাত্রা টা খুব সুখের হয় নি। সেই সব হেডলাইন অন্য বছরের
First, it is quite staggering to see so many politicians across the world are lawyers by profession. The list includes Barrack Obama in USA to Jyoti Basu in India. How can we forget Gandhi's name? His political career started when he was fighting civil cases in South Africa. In last two hundred years, especially after flourish of democracy lawyers shaped our life more than ever before.
What is so special with lawyers?
Today I went to Istana to give Mr. Lee his last farewell.
Remembering LYK - 28th March 2015
Remembering LYK - 28th March 2015
Lee Kuan Yew's brilliant career gives us enough clues behind this extraordinary success of lawyers across continents. Mr. Lee is Singapore's first prime minister. He was exceptional leader and possibly only political leader worth studying in Asia within last 60 years. He changed face of Singapore in 4 decades. Also his pragmatic diplomacy made South Asia a much more peaceful country in last 30 years.
If you see list of modern city states almost each one is good economic success story. Malta, San Marino, Liechtenstein, Andorra, Luxembourg,Qatar; Brunei, Kuwait, and Bahrain. Singapore's name as economic success may not sound such an exception. However, underneath Singapore is absolutely different. Unlike Luxembourg it is not surrounded by rich neighbors. Unlike Qatar, it has no natural resource. Now, .... who remembers leaders of these city states .... but Mr. Lee continuously captures mind share.
Mr. Lee became first prime minister of independent Singapore in 1965 under bizarre circumstances. Singapore was thrown out of Malay federation. So Singapore became independent country by force of events. We need to go back to history to understand 1960 and 1970s. Lot of things were happening across South Asia. Malay and Chinese racial tensions, mistrust on communists, continuous political instability across south Asia countries made Mr. Lee's task extraordinarily difficult. Mr. Lee's success with this backdrop has no parallel in this region even if we look back 200 years of history.
It is not easy to understand from outside of Singapore, importance of racial harmony as backbone of every other success.
Harmony
I am living in Singapore for around 2 years. First thing I, or possibly any other careful observer notice is amazing racial harmony. It is hard to imagine how did Singapore manage to overcome more than 300-400 years of Malay-Chinese divisions, Hindu-Muslim divisions.
Singapore's growth was achieved on the backbone of meritocracy. Meritocracy can not be achieved unless you know how to work around racial or cultural differences.
Could you have done India
One Journalist asked Mr. Lee, "Could you have done India". Mr Lee's answer was candid "No" and he went on to add more "It's an established ancient civilization. Nehru and Gandhi had a chance ... but .. they could not break the habits." It is absolutely amazing to see his deep insight considering he was not in Indian. It is also fascinating to watch similarities between two lawyers turned politicians - Mohandas Gandhi and Lee Kuan Lee. Gandhi made removal of 'untouchable' as his key political agenda. Gandhi did not fail but he was also not successful to remove caste system from Indian fabric. Mr. Lee brilliantly connected back this failure with more than 5000 years of Indian heritage.
Analytic View
Mr. Lee went on to give his pragmatic view on India. Lee shrugs as we review all this geopolitical landscape. Without exchanging a word, we accept that China will probably hold to ‘peaceful rising’, in Beijing’s stilted mantra. Or that view could prove naïve and it might wake up one day and follow in the footsteps of any number of giants in history and start eating up tiny neighbors. This is where India might come in handy. It’s not hard to follow Lee’s crisp logic. “Who is the counterweight?
Japan cannot be the counterweight. It has not got enough bodies. Together Japan and America, yes, can be a counterweight, economically and physically, and militarily, but who is the X counterweight within Asia. Exactly here India comes into equation. In last two thousand years India and China continued to balance each other. It also kind of complement each other. History of Malacca can not be discussed without a discussion of India-China trade route.
Singapore's advance has no parallel in entire Asia and possibly only handful across globe in last fifty years. Economic development of this once port city was unparalleled. Singapore's GDP
However, it is not only about money. Singapore's progress in Health, Safety, Education again has no parallel in entire globe. Indians should feel shame and our sense of urgency should increase many fold after seeing the Singapore's improved life expectancy over fifty years. Life Expectancy In Singapore
Lee created an efficient system of bureaucracy. Once you live in Singapore, you realize the beauty of this uncomplicated system. Best part of Singapore's system is simplicity. One of the most criticized Lee's move was ban of chewing gum. Whenever I traveled in Europe, I got remarks on chewing gum ban. Admittedly these remarks were all friendly humor rather than anything more sinister. What did Mr. Lee say about chewing gum ban? "We were called a nanny state," he told the BBC's Peter Day in 2000. "But the result is that we are today better behaved and we live in a more agreeable place than 30 years ago."
It is hard to disagree with Mr. Lee. Chewing gum usage has incredible and often disproportionately high cost. Considering the difficulty it takes to remove chewing gum by hand it is actually an insult to the cleaners. Narendra Modi needs to learn from Mr. Lee if Swatch Bharat campaign has any realistic chance of success.
Foreign Policy
In 1950-60 there were two predominant themes in entire South-East and South Asia, communist and anti-communist. Malay, Indonesia domestic policies were heavily dominated by anti communist themes. Mr. Lee had strong anti-communist views. So Singapore went anti communist way. India under Nehru went for communist economy. That dragged back Indian economy at least 40 years. The price is enormous and every ordinary Indian is paying the price. LKY (Lee Kuan Yew known with his short form) was pragmatic, Machiavellian leader.
First 15 years of Singapore's independence was dominated by exceptionally pragmatic foreign policy. Once again we see dominance of lawyers in foreign policy.
Fundamental believe is to economic prosperity brings peace. This simple policy every one possibly understands and knows. However, time and time again political leaders in India ignored this simplicity. This discussion will take us to democracy. I do not think, any human being should pay democracy tax. Whole of west developed the economic base while they were democratic within their own country but at the same time sustainable economic growth was funded from colonies.
Before it gets lost into internet archiving, read Henry Kissinger's article Kissinger on Lee Kuan Yew.
"A visit by Lee to Washington was a kind of national event. A presidential conversation was nearly automatic; eminent members of the Cabinet and Congress would seek meetings. They did so not to hear of Singapore’s national problems; Lee rarely, if ever, lobbied policymakers for assistance. His theme was the indispensable U.S. contribution to the defense and growth of a peaceful world. His interlocutors attended not to be petitioned but to learn from one of the truly profound global thinkers of our time."
Kissinger's article has one more important sentence. Had Singapore chosen the road of its critics, it might well have collapsed among its ethnic groups, as the example of Syria teaches today.
I found this video in youtube. This video can be used for coaching in corporate environments.
Imagine the pressure on this young prime minister. His country is surrounded by much larger neighbors. Foreign affair environment is filled with only mis-trust. Malaysia, Indonesia had mistrust on Singapore - racial divisions used to rule foreign and domestic policies. USA attacked communist Vietnam, allowed USSR and China to play a role in Singapore's regions. Moving out of USA will immediately bring them into Lee's own backyard. Barrage of questions from NBC journalists on Lee's views of American bombing - it is hard to imagine today the "what if" Lee succumbed to pressure of journalists. Watch his conviction on China.
Remembering Mr. Lee
As a pragmatic man, Mr. Lee would not care whether he would be remembered fondly or not. It is our best interest to remember him for a long long time. He is most important political character in last 60 years. In stead of Mr. Nehru, if Indians had Mr.Lee after 1947 it would be different story. However, those nation look back into past stay in past. Hope Asian countries will follow Mr. Lee. Beyond the politicians, ordinary civilians across world will learn pragmatic, hard working, great analytic mind.
ভারতীয় অবদান দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এই সব অঞ্চলের উপরে অনস্বীকার্য। তবে ভারতের অনেকের ভিতরে ধারণা আছে যে ভারত থেকে লোকে গিয়ে এই অঞ্চল গুলো দখল করেছিল। সেটা একদমই ভুল।
ভারতের প্রধান প্রভাব ছিল ধর্ম , সংস্কৃতি, বাণিজ্য , সেচ , বিজ্ঞান এর নানা দিকে। বৌদ্ধ, হিন্দু এই দুটো প্রধান ধর্ম ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ এশিয়া তে। আসলে ভারত থেকে কিছু লোক এসে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ঠিক করা ছিলেন এই বিশিষ্ট জনরা ? আজ আর ঠিক বলা যাবে না। তবে এরা ছিলেন প্রধানত ব্রাহ্মণ। একই সাথে পন্ডিত নানা জায়গাতে গণিত থেকে দর্শন। এরাই পরামর্শ দিতেন স্থানীয় রাজাদের পররাষ্ট থেকে নানা বিষয়ে। কি করে এরা ভারত থেকে এত দূরে গেলেন , আজকে বলা মুশকিল লিখিত ইতিহাসের অভাবে।
প্রায় ১০০০ বছর ধরে চলা ভারতের এই প্রভাব বিস্তার এর ইতিহাস একটা অসাধারণ ইতিহাস। এই দক্ষিণ এশিয়া এর অঞ্চল গুলো কিন্তু ভারতের সব কিছু একে বারে গ্রহণ করে নি। যেমন ধরুন, আমাদের বর্ণ প্রথা। ভারতের প্রভাব থাকা সত্বেও বর্ণ প্রথা কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া এর কথাও ছড়িয়ে পরে নি। সত্যি কথা বর্ণ প্রথা। ভারতের বাইরে কোথাও তেমন যায় নি। যদিও ভারতের ধর্ম এবং জ্ঞান আরো অনেক অঞ্চলের উপরে অসাধারণ প্রভাব ফেলেছিল। হয়তো সেই কারণে দক্ষিণ এশিয়া এর দেশ এর মানুষ পরের দিকে মুসলিম ধর্মে চলে গেলেন। ঠিক তেমনি দক্ষিণ এশিয়া এর মন্দির এর গরনেরও ভারতীয় প্রভাব থাকলেও নিজের স্থানীয় শিল্পের ছাপ আপনি কিছুতেই মিস করতে পারবেন না।
আগের ছবি টা বালি তে তোলা। রাম, সীতার মূর্তি। রামায়ণ এবং মহাভারত জাভা তে স্থানীয় ভাষাতে অনূদিত হয়েছিল। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এর দেশ গুলোর অর্থনীতি, ব্যবসায়, স্থাপত্য, সংস্কৃতি সব কিছুর ওপরে চীন এর প্রভাব রয়েছে। ঠিক তেমন-ই রয়েছে ভারতের প্রভাব। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো ভিয়েতনাম। ভিয়েতনাম দীর্ঘদিন চীন এর অধীন-এই ছিল, ৯২৯ খ্রীস্টাব্দ এর কাছাকাছি চীন ভিয়েতনাম এর দখল হারায়। ভিয়েতনাম এর ওপরে ভারতের ছাপ কিছুই নেই, ভারত - ভিয়েতনাম এর আদান প্রদান সব-ই বর্তমান যুগের।
আধুনিক ভিয়েতনাম এর ঠিক পাশেই কাম্বোডিয়া। কাম্বোডিয়া এর অ্যাংকর ভাট বানানো শুরু হয় ৯০০ খ্রীস্টাব্দ এর কাছাকাছি। প্রধান মন্দির কমপ্লেক্স তৈরী হয়েছিল ৪০ বছরের ভিতর। অ্যাংকর এর উপরে ভারতীয় ছাপ সর্বত্র। রাজা সূর্যবর্মণ এর সময় তৈরী শুরু হলো এই মন্দির। রাজার নাম তো আজকের ত্রিপুরার কোনো রাজা বলে দিব্বি চালিয়ে দেওয়া যায়। তবে ভারতের অবদান কাম্বোডিয়া এর অ্যাংকর ভাট এ শুধু শেষ হয়ে যায় না। এক সময় কাম্বোডিয়া এর নিয়ন্ত্রণ ছিলো আজকের থাইল্যান্ড এর উপরেও। কাম্বোডিয়া কিন্তু শ্রী বিজয়ার মতো ট্রেডিং নেশন ছিল না। কাম্বোডিয়া এর অর্থনীতির প্রধান জোর ছিল কৃষি উৎপাদন। কাম্বোডিয়া বছরের ৩-৪ মাস বন্যার জলে প্লাবিত থাকে। তার পরে, বর্ষার সময় শেষ হলেই একটা দীর্ঘ শুকনো সময়।
কাম্বোডিয়া এর গোল্ডেন টাইম ধরতে গেলে ৮০০ থেকে ১৩০০ খ্রীস্টাব্দ। সেই একই সময় কাম্বোডিয়া এর অসাধারণ উন্নতি হয় খাল এবং সেচ ব্যবস্থা এর। যার ফল হলো অভূতপূর্ব কৃষি সমৃদ্ধি। আসতে আসতে না না কারণে কাম্বোডিয়া এর অর্থনীতির জোর কমে যায়। তার ফলে থাইল্যান্ড থেকে ক্রমাগত আক্রমণ হতে থাকে। একটা সময় গিয়ে কাম্বোডিয়া এর এই খাল এবং সেচ ব্যবস্থা পুরো নষ্ট হয়ে যায়। খাল গুলো ম্যালেরিয়া এর মশার আস্তানা হয়। পরের দিকে ১৪০০ সাল নাগাদ কাম্বোডিয়া এর বিস্তীর্ণ অঞ্চল এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। মনে রাখতে হবে সেই যুগে এই সব রোগের কোনো চিকিৎসা ছিল না। তাই একমাত্র রাস্তা ছিল অন্য জায়গাতে চলে যাওয়া। কাম্বোডিয়া এর ক্ষমতা চলে যাবার সাথে সাথে আজকের থাইল্যান্ড অঞ্চলের ক্ষমতা বাড়তে থাকে। থাইল্যান্ড কম্বোডিয়া এর ভারতীয় ছাপ কে নিজের মত করে গ্রহণ করে পাল্টে নিল।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এর এই যুগ এর ইতিহাস এর একটা জোর বদল এলো ১৪০০ সাল এর কাছাকাছি। আমরা চলে এলাম প্রায় মালাক্কা এর পর্তুগিজ ইতিহাস এর কাছে।
ভারতের শেষ ১০০ বছরের ইতিহাস এ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১০ টা টানা' বছর বলতে হলে আমাদের ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ এর এই দশ বছর ধরতেই হবে। ১৯৩৭ এ ভারতের প্রায় কোনো নেতাই ভাবতে পারেন নি আর মোটে ১০ বছরের মধ্যে ভারত স্বাধীন হবে। ব্রিটিশ সাম্রাজের অবস্থা ১৯৩৭ এ যে রকম রমরমা তাতে কোনো ব্রিটিশ মনেই এই আশংকা আসে নি।
এই দশ বছরের অমৃত বাজার পত্রিকা নিয়েই এই লেখা। আমরা শুরু করি ১৯৩৯ থেকে। পরের দিকে যাবার আগে বলা দরকার সব কটা স্ক্যান ইমেজ ই ব্রিটিশ লাইব্রেরি এর প্রজেক্ট থেকে নেওয়া। এ ছাড়াও গুগল নিউস আর্কাইভ এ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর বেশ কিছু পুরনো স্ক্যান ইমেজ আছে। তবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর অনেক দিনের কাগজ ই গুগল এর সাইট এ নেই। তাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর কাগজ নিয়ে বেশি আলোচনা করা মুশকিল। তবে এটাও ঠিক অমৃত বাজার এর এই স্ক্যান কপি ও কিছু দিন আগেও ছিল না। এখনো স্ক্যান এর মান বেশ খারাপ। তাও অমৃত বাজার এর হেডলাইন দেখে আমরা সেই দিনের প্রধান খবর এর ধারণা করতে পারি। আশা করব যুগান্তর এর স্ক্যান কপি ইন্টারনেট এ পাব। আনন্দবাজার খুলে দেবে তাদের পুরনো দিনের কাগজের সম্ভার।
ফিরে আসি কাগজের কথাতে। অমৃত বাজার এর প্রথম পাতা এপ্রিল এর ১৩ এর কাগজ। পাতা ভর্তি ইউরোপ এর খবর। ২য় বিশ্বযুদ্ধ এর শুরু র চাপ চাপ উত্তেজনা সেই দিনের প্রথম পাতায়। তবে শুধু যুদ্ধ নয়, গান্ধীজির কথাও ছিল।
১৯৩৯ এর কাগজের প্রথম পাতার ওপরে লেখা থাকত "স্বরাজ আমাদের অধিকার" , আর "অহিংসা আমাদের ধর্ম"। ১৯৪০ এ সেই স্বরাজ আর অহিংসা এর কথা লেখা হত না কাগজের প্রথম পাতার হেডলাইন এর ধারে। অমৃত বাজার এর ১৯৩৯ এর দাম ছিল ৩ আনা, ১৯৪৮ এ দাম হলো ২ আনা। বোঝাই যাচ্ছে বাঙালি এর অর্থনৈতিক ভাবে টিকে থাকার একটা লড়াই চলছিল সেই সময় থেকে। তবে অমৃত বাজার ১৯৩৯ সালে দৈনিক ছিল না, ১৯৪৮ সালের আগেই কাগজ প্রতিদিন বেরোত। ১৯৪৭ এর ১৫ ই অগাস্ট এর বিশেষ সংস্করণ এর দাম ৪ আনা। ২০১৫ সালের আজকের কাগজ দেখলেও আমরা সাধারণ মানুষ এর কথা তেমন পাই না। সেই যুগের অমৃত বাজার ও ছিল প্রধানত শহরের কাগজ। কেনা খবর ই বেশি বেরোত। ১৯৩৯ - ১৯৪৮ এর এই দশ বছর বাঙালি সত্যিই এক বিশ্ব নাগরিক ছিল। যুদ্ধ সুদূর ইউরোপ থেকে ঘরের কাছে এসে পড়েছিল। যুদ্ধ এর ফলে বাঙালি র ভাত কাপড়ের নিদারুণ টান পত্রিকা এর পাতাতে মাঝে মাঝে উঠে আসত।
১৯৩৯
১৯৩৯ এর শুরু তে যুদ্ধ এর কালো মেঘের ইংগিত অমৃত বাজার এর প্রথম পাতাতে। হিটলারের ভাইপো এর নাজি দের হাতে মার খাবার কথাও রয়েছে ! এই ভাইপো এর পরে, ১৯৫২ তে মৃত্যু দন্ড হবে ইহুদি নিধণ এর জন্য।
পুরনো কাগজের এই এক মজা ইতিহাস - বর্তমান - ভবিষৎ সব এক হয়ে যাওয়া। সেই দিনের আর এক ঘটনা যা কাগজে এলো - ইতালি এর হাতে আলবানিয়া এর হার। এটাও ২য় বিশ্ব যুদ্ধ এর একদম শুরুর ঘটনা।
১৩ ই এপ্রিল ১৯৩৯ এর কাগজ টা যেন পুরো ১৯৩৯ সালের এর খবর-এর ই এক ছবি। বছরের বাকি দিনের কাগজ না পরলেও চলে। তখন কার দিন গুলো এই রকম ই ছিল।
কাগজে আসত প্রধানত ইউরোপ এর লড়াই এর শুরু এর কথা - মাঝে মাঝে কিছু ভারতের কথা, এই বাংলার কথাও আসত। তবে দেশের কথা বেশির ভাগ ই ছিল খারাপ খবর। যেমন নর্থ বেঙ্গল এর এই ট্রেন দুর্ঘটনা এর কথা উঠে এলো সেই দিনের হেডলাইন এ।
যুদ্ধ এর দামামা বাজার সাথে সাথে অর্থনীতির আকাশ এ কালো মেঘ নেমে এলো। সাফাই কর্মীদের ধর্মঘট কলকাতা সহর অচল করে রেখেছিল। সেই ধর্মঘট শেষ হবার কথা বেরোলো সেই ১৯৩৯ এর এপ্রিল এর কাগজে। মাসিক বেতন ৩০ টাকার নিচের কর্মীদের মাইনা ১ টাকা করে বাড়লো প্রতি ৩ মাসে। মাসে ৩০ পায়সা বাড়া !!! যারা ভাবছেন ৩০ পায়সা ১৯৩৯ এর আজকের অনেক, তাদের জন্যই জানাই আজকের দিনের ২০ টাকার মত। আজকের দিনে কোনো সরকারী ধর্মঘট ২০ টাকা মাইনা বাড়লে বন্ধ হবে কি ?
১৯৪০
আমাদের অনেক এর একটা ধারণা আছে যে ইংরাজ আমলে দেশের অর্থনীতি অনেক ভালো ছিল। এটা একটা বিপজ্জনক মিথ। ১৯৪০ এর জানুয়ারী এর প্রথম দিনের কাগজে জ্যোতিষী গ্রেট ব্রিটেন এর ১৯৪০ এর সারা বছরের পূর্বাভাস মিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে !! ১৯৪০ এ র এপ্রিল এর কাগজ এ বড় করে বেড়িয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশন এর ময়লা কর্মীদের ধর্মঘট। মাসের মাইনা ছিল মোটে ৩০ টাকা। যারা বলবেন ৩০ টাকা তখনের দিনে অনেক টাকা - মানা মুশকিল।এদিকে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। মাঝে মাঝেই অমৃত বাজার স্পেশাল afternoon এডিশন বার করছে। এপ্রিল ৯, ১৯৪০ এর সেই রকম ই একটা দিনের কাগজ এর প্রথম পাতা। হিটলার এর জার্মানি নর্ডিক দখল শুরু করেছে।
ঘটনা এত তাড়াতাড়ি ঘটছে যে সপ্তাহে একদিন স্পেশাল এডিশন এ লোককের চাহিদা মিটছে না। আমি ১৯৪০ এর মে- জুন মাসের অনেক গুলো কাগজ ই এক সাথে দিয়েছি। অকল্পনীয় দ্রুততার সাথে ঘটনা ঘটছে। জার্মানি এর গতি অপ্রতিরোধ্য। খুব তাড়াতাড়ি জার্মানি ফ্রান্স এর দরজাতে পৌছে গেল। এত দিন বাদে যারা মনে রাখতে পারেন নি মাগিনট লাইন, তাদের জন্য - ১৯১৮ এর লড়াই এর পরে ফ্রান্স জার্মান - ফ্রান্স বর্ডার এ এক ব্যাংকার সিস্টেম তৈরী করে। সেটাই মাগিনট লাইন যা ফ্রান্স এর ইন্সুরেন্স ছিল। ম্যাগিনট লাইন এর পতন একটা বিরাট খবর কারণ এর পরে ফ্রান্স এর দখল নেওয়া সময় এর অপেক্ষা শুধু।
বছরের শেষ দিকে বেরোলো ভাওয়াল সাধু মামলার বহু প্রতিক্ষিত রায়। যুদ্ধ এর হেডলাইন একদিনের জন্য দখল করে নিল সেই খবর।
১৯৪১
১৯৪০ এর কাগজ ছাড়িয়ে চলে এলাম ১৯৪১ এ। এবার ইউরোপ নয়, আমাদের ঘরের খবর। রবীন্দ্রনাথ এর মৃত্যু এর দিনের বিকালের সেই স্পেশাল এডিশন। আজকে বোধ হয় ধারণা করতে পারব না কি আলোড়ন ফেলেছিল সেই দিনের খবর। পৃথিবীর কোথাও কি দেখা গেছে এক কবির জন্য এত লোক। পরের দিনের অমৃত বাজার এর সব পাতাই তুলে ধরতে মন করছে। আমরা বিজ্ঞাপন গুলো নজর করব। মাঝে মাঝে অমৃত বাজার এর বিজ্ঞাপন এর জায়গা খালি। বোঝা যাচ্ছে অর্থনীতির বেহাল অবস্থা। রবীন্দ্রনাথ যেদিন মারা গেলেন কাগজের উপরের ছোট বিজ্ঞাপন টা দেখুন - ক্যান্সার নিরাময় এর রেডিও থেরাপি এর বিজ্ঞাপন। কিছু কিছু জিনিস ৭০ বছর পরেও একই রকম সাম্প্রতিক।
মাওলানা আজাদ গ্রেফতার! দিল্লি থেকে কলকাতায় যাওয়ার পথে এলাহাবাদ স্টেশনে
কংগ্রেসের সভাপতি মাওলানা আজাদ আজ সকালেই এলাহাবাদ স্টেশনে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। 13th ডিসেম্বর তাঁর দেওয়া একটা বক্তৃতার সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এলাহাবাদ থেকে জারি করা ওয়ারেন্ট মারফত শহরের পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট তাঁকে গ্রেফতার করেছেন। এখন তিনি Naini central jail-এ আছেন।
এই গ্রেফতার ভারতের বর্তমান দুর্দশার কথা মনে করিয়ে দেয়। একদিকে বিশ্বযুদ্ধের ঝামেলা, অন্যদিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জোর। এই অবস্থায় এই গ্রেফতার, আলাদা ঘটনা না আগামীতে কংগ্রেসের উপর আরও হামলার ইঙ্গিত, তা এখনই বলা কঠিন। তবে একটা কথা ঠিক, মাওলানা আজাদের গ্রেফতার সারা দেশ জুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করবে, রাজনৈতিক পরিবেশে তোলপাড় ফেলবে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াবে।
In terms of news coverage intensity, Rabindranath Tagore's death stands out as a truly momentous event in Indian history. Unlike even the shocking assassination of Mahatma Gandhi in 1948, the news of Tagore's passing in 1941 dominated every single page of the Jugantar. This unprecedented dedication to a single story reflects the profound impact Tagore had on the nation and Bengali mindset, surpassing even the immense shock and grief Gandhi's death brought.
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু, ভারতের সংবাদপত্রের ইতিহাসে এক অদৃষ্ট ঘটনা। ১৯৪১ সালে, যখন গোটা জগৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগুনে জ্বলছিল, তখন রবীন্দ্রনাথের বিদায় সংবাদ ঝড়ের ঢেউয়ের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তার মৃত্যুর শোক এমন গভীর, এমন সর্বব্যাপী যে, 'যুগান্তর'-এর মতো জনপ্রিয় পত্রিকাও তার সব পৃষ্ঠা শুধুই তার কবিতা, গান, ছবি, লেখা দিয়ে ভরে দিয়েছিল।
মহাত্মা গান্ধীর ১৯৪৮ সালের হত্যার কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু যে আঘাত দিয়েছিল, তা ছিল অন্য রকম। এটা ছিল মায়ের কোলে শুয়ে থাকা শিশুর মতো, হঠাৎ তার হাত ছুটে যাওয়া। এটা ছিল এক স্বপ্নের ভাঙন, এক যুগের সমাপ্তি।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুধুই খবর ছিল না, তা ছিল এক জাতির হাহাকার, এক সংস্কৃতির শোকগান। যুগান্তরের পাতায় পাতায় রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি, তার কবিতার সুর, তার গানের স্বর, তার ছবির ছায়া - এসব মিলেমিশে এক অমৃত স্মৃতিস্তম্ভ রচনা করেছিল।
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু, ভারতের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় কাহিনী। এটা ছিল শুধুই একজন কবির মৃত্যু নয়, এটা ছিল এক জাতির আত্মার ক্ষতি। যুগান্তরের পৃষ্ঠাগুলো সাক্ষী, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু কতটা গভীরভাবে, কতটা অসম্ভবভাবে স্পর্শ করেছিল ভারতের হৃদয়কে।
১৯৪২ ১৯৪২ এর প্রতি বোধ করি তেমন সুবিচার করলাম না। অনেক অনেক যুদ্ধ এর খবর, গান্ধীজির খবর সেই বছরের হেডলাইন এ। বছর শেষ হচ্ছে কলকাতার উপরে জাপানি বম্বের আক্রমণ দিয়ে। ততদিনে যুদ্ধ এর গতি পরিষ্কার। অক্ষ বাহিনী হারছে। সেই সময় পূর্ব মুখী মার্কিন সেনার সাপ্লাই লাইন এর শুরু ছিল কলকাতা। শেষ চেস্টা করতে জাপানি রা কলকাতার সাপ্লাই লাইন এ বাধা দিতে কলকাতা আক্রমণ করলো। যুদ্ধ এর গতি পরিবর্তন হলো না। তবে
আমাদের অপদার্থ নেতা দের জন্য এর পরেই যে দুর্ভিক্ষ হলো তাতে সেই জাপানি আক্রমণ এর কিছু ভূমিকা আছে।
১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ এই ১০ বছর সত্যি একটা অন্য রকম দশক। ৫০ এর দুর্ভিক্ষ এর কথা আজকে আমরা এখনো পুরো ভুলি নি, সেই যুগের কিছু অসাধারণ গল্প, নাটক এর জন্য। কিন্তু কৌতূহল হলো কি সেই যুগের কাগজে সেই কথা ছাপা হত। দুর্ভিক্ষ এর কলকাতার লাইফ ম্যাগাজিনে এর ছবি ইন্টারনেট দেখলেই পাবো। অমৃত বাজার এ আমি দুর্ভিক্ষ এর সেই ছবি দেখতে পাই নি। তবে সেই সময় এর কথা কাগজ এ ছাপা হত। প্রথম পাতার বাইরে সম্পাদিকীয় তে ফুড পলিসি এর অনেক সমালোচনা বেরোত। তার একটা পাতা নিচের কাগজ এ।
লড়াই এর খবর ছাপিয়ে সেদিনের নিদারুন খাদ্যাভাব এর কথা কাগজের প্রথম পাতাতে চলে আসত কোনো কোনো দিন। পাতার মাঝের কার্টুন টা, একটু দুঃখের। পত্রিকা সাধারণ লোকের কথা ভেবে যে পাতা কমিয়ে ১ আনা দাম চালিয়ে আসছিল সেই পর্যন্ত। সেই দিনটা ছিল ১ এপ্রিল ১৯৪৩। বাঙালি এর জীবনে তখন প্রায় সবই এপ্রিল ফুল এর দিন। সেই সময় দিনে অমৃত বাজার বাধ্য হলো দাম বাড়াতে।
১৯৪২ এর প্রথম দিনের কার্টুন এ রুজভেল্ট এর অসাধারণ কার্টুন যে খানে আমেরিকা ফ্রিডম ইনজেকশন দিচ্ছে বাকি দেশ কে।
বেশ কিছু দিন থেকেই রবিবার এর কাগজ এর একটা আলাদা গুরুত্ব। আমি একটা রবিবার এর কাগজ টা তুলে দিলাম। সেই দিনের কাগজ অন্য রবিবার এর থেকে খুব আলাদা না হলেও এর ভিতর এ যেন পরের ৫-১০ বছরের ইতিহাস এর লেখা দেখা যাচ্ছে। কাগজ এর ডান দিকে দেখছি, আমেরিকা তে উঠছে ভারত এর স্বাধীনতা এর কথা। ভারত এর স্বাধীনতা এর পিছনে আমেরিকাতে ওঠা আলোড়ন এর একটা গুরুত্ব ছিল। যুদ্ধ পরবর্তী সময় এ ব্রিটিশ আধিপত্য প্রায় শেষ হয়ে গেল। যুদ্ধ দেখিয়ে দিল ইউরোপ বাকি পৃথিবী দখল করে রাখলেও আমেরিকা এর উপরে কি রকম নির্ভরশীল। আমেরিকা শুধু সামরিক শক্তি না, অর্থনীতি, বিজ্ঞান সব দিক থেকে এগিয়ে গেছে। আমেরিকা তে ততদিন এর এই চিন্তা হতে শুরু হয়েছে যে ব্রিটেন এর ঔপনিবেশিক মনোভাব স্থায়ী শান্তির প্রতিবন্ধক। আরো মনে রাখতে হবে, মার্কিন মিলিটারি ততদিনে ভারতের নানা শহরে এসে পড়েছে। কলকাতার দুর্ভিক্ষ এর কথা ঘনঘন বেরোচ্ছে মার্কিন কাগজে। তাই যুদ্ধ পরবর্তী সময় এ মার্কিন মনোভাব কে মর্যাদা দিতে ব্রিটেন বাধ্য ছিল। সেই দিনের কাগজ এ দেখা যাচ্ছে সেই যুদ্ধ পরবর্তী সময় এর ইঙ্গিত।
মার্কিন ট্যাংক - ইউরোপ এর ট্যাংক এর তুলনা বেরিয়েছে কাগজের অন্য দিকে।
১৯৪৩
১৯৪৩ এর শুরু এর দিক থেকে জার্মানি এর যুদ্ধ এ পিছিয়ে যাওয়া একদম পরিষ্কার হতে শুরু হয়ে যায়। সেই রবিবার এর সকালের কাগজ এ বেরিয়েছে কুবান এর লড়াই এর কথা। অসাধারণ সুন্দর কুবান মাউন্টেন অঞ্চল থেকে জার্মান দের পিছিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে।
তবে কাগজ এ যুদ্ধ ছাড়াও কিছু সাধারন এন্টারটেইনমেন্ট ও ছিল। শেষের পাতা তে বেরোত ছোট গল্প, ব্রিজ ট্রিক। তবে সেই গল্প সাহেবী গল্প ই ছিল।
১৯৪৪
১৯৪৪, লড়াই এর শেষ দেখা যাচ্ছে। পর পর ঘটছে ঘটনা। একটা করে মাস যাচ্ছে মিত্র বাহিনী জার্মানি কে ঘিরে ফেলছে। এক দিনের কাগজে বেরোচ্ছে সোভিএট বাহিনীর এগিয়ে যাবার গল্প, তো পরের মাসেই ঘটছে মিত্র বাহিনীর ফ্রান্স এর নর্মান্ডি বিচ দখলের কাহিনী। সেই সঙ্গে বেরোচ্ছে গান্ধী - নেহেরু এর না না ভাষণের কথা। এত দিনে যে আমরা স্বাধীনতা দেখতে পাচ্ছি।
১৯৪৫
১৯৪৫, প্রথমেই যাই এপ্রিল মাসে। তাসের ঘর ও বোধ হয় এর থেকে বেশি মজবুত। গায়ে কাটা দেবার দ্রুততাতে প্রথমে মুসোলিনি, পরে হিটলার এর মৃত্যু। তখনোর পূর্ব দিকে র লড়াই শেষ হয় নি। অগাস্ট মাসের অমৃত বাজার এর হেডলাইন এ এলো হিরোশিমা এর এটম বোম্ব।
যত দিন যায় নতুন বম্ব এর কথা ততই বেশি জানা গেল। ততদিনে ইউরোপ এর লড়াই শেষ। তাই কাগজের একদিকে জাপান ফ্রন্ট এর শেষ দিকের খবর আর কাগজের অন্য দিকের খবর হলো পতস দাম এর বৈঠক।
মাঝে মাঝে ভাবি কোথায় গেল আজাদ হিন্দ ফৌজ এর বিবরণ। হয়ত ব্রিটিশ সেন্সরশিপ এর জন্য তাদের খবর বেশি ছাপা হত না। যদি তাই হয় তাহলে সত্যি কি সাধারণ মানুষ জানত আজাদ হিন্দ ফৌজ এর কথা ? মনে রাখতে হবে অমৃত বাজার কিন্তু ঠিক সাধারণ মানুষের কাগজ ছিল না। সাধারণ মানুষের ইতিহাস জানা চিরকালই মুশকিল। হয়ত একদিন ইন্টারনেট আমাদের সাধারণ মানুষের ইতিহাস লিখতে অনুপ্রানিত করবে। ১৯৪৫ এর শেষ দিকে শুরু হয়েছিল আজাদ হিন্দ ফৌজ এর লাল কেল্লা এর বিচার। সেই বিচার যে আলোড়ন ফেলেছিল তা বেশ বোঝা যায় সেই ডিসেম্বর এর অমৃত বাজার এর প্রথম পাতার দিকে তাকালে। অমৃত বাজার ফান্ড রাইজিং শুরু করেছিল। কাগজের ফান্ড ২৫০০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
1945 August - ইস্ট বেঙ্গল দল দ্বিতীয়বার আইএফএ শীল্ড জিতল
কলকাতা ফুটবলের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় রচিত হলো গতকাল। ইস্ট বেঙ্গল দল ফাইনালে মোহনবাগ্নান দলকে এক গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আইএফএ শীল্ড জিতলো।
ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে, কিছু কিংবদন্তি নাম আছে যারা কখনও ভোলা যাবে না। এমনই একজন ফ্রেড প্যাগস্লি, ইস্ট বেঙ্গলের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়।
একজন অ্যাংলো-বার্মিজ ফুটবলার, প্যাগস্লি ১৯৪৪-৪৫ সালে ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি ভারতীয় ফুটবল ক্লাবের প্রথম বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবেও বিবেচিত হন। তার দক্ষতা এবং দলের সাফল্যে অবদানের জন্য তিনি অপার জনপ্রিয়তা এবং সম্মান অর্জন করেছিলেন।
তবে, প্যাগস্লির জীবনের পথ সহজ ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মায় (বর্তমান মায়ানমার) রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তিনি কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে আসেন। ঘন জঙ্গল ও নদী পার করে তাঁর এই ভ্রমণ ছিল অবিশ্বাসনীয়।
ইস্ট বেঙ্গলে যোগদানের পর, প্যাগস্লি মাঠে তার অসাধারণ প্রতিভা দর্শক এবং সহকর্মীদের মন জয় করে নেন। তাঁর উজ্জ্বল খেলা ইস্ট বেঙ্গলের অনেক সাফল্যের পিছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
যদিও প্যাগস্লির সম্পর্কে তথ্য সীমিত, তবু ইস্ট বেঙ্গলে তাঁর প্রভাব অবিস্মরণীয়।
১৯৪৬
১৯৪৬ কাগজ এর প্রথম পাতাতে উঠে এলো স্বাধীনতার প্রস্তুতি। ১৯৪৬ এর প্রতি তা মাস ভারতের ইতিহাস এর অসাধারণ এক একটা চ্যাপ্টার। না, গর্ব করার মত সব কিছু যে তা নয়. যেমন অগাস্ট এর দাঙ্গার কথা। কলকাতার সেই দাঙ্গা ভারত ভাগের প্রায় শেষ ছবি। মুসলিম লীগ তার পরে নোয়াখালীর দাঙ্গা করে নিশ্চিত করে নিল দেশ ভাগ।অমৃত বাজার সেই দিনে ছিল বেশ নিরপেক্ষ।
১৯৪৭
১৯৪৭ এর ১৪ ই অগাস্ট এর কাগজ এ দেখছি স্বাধীনতার প্রস্তুতি। ১৪ই অগাস্ট। এত দিনের লড়াই শেষ। স্বাধীনতা আসতে আর মোটে এক দিন বাকি। কিন্তু সেই দিনের কাগজ দেখলে বেশি ভরসা হয় না। মুসলিম রা রাজি হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস এ !!! কাগজের অন্য দিকে বেলেঘাটা এর গান্ধী আশ্রম (আজকের নাম) এ গান্ধীর ওপরে হিন্দু যুবক দের হামলার কথা। কেমন যেন আগাম ইঙ্গিত পাবো ১৯৪৮ এর ৩০ জানুয়ারী এর কালো দিনের !
সেই দিনের কাগজ এ দেখছি ১৯৪৭ এর ১৫ অগাস্ট এর অমৃত বাজার কালার প্রিন্ট এর কথা। আহা সেই দিনের কাগজের রঙিন প্রিন্ট আমরা দেখতে পেলাম না। স্ক্যান কপি সাদা কালো তে। সেই দিনের আনন্দ বাজার এর রঙিন প্রিন্ট ইন্টারনেট এ রয়েছে।